অয়ন বাংলা ,নিউজ ডেস্ক:- নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ঘরে-বাইরে প্রবল অস্বস্তির মুখে ভারতীয় জনতা পার্টি৷ বিজেপির মেন্টর রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ এই নিয়ে ভীষণ খাপ্পা৷ এমনকী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল সহ কট্টর হিন্দু সংগঠনগুলিতো প্রকাশ্যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো অসমে পথে নেমে বনধ পালন করেছে৷ এই পরিস্থিতিতে সোমবার ‘গুরু’ সংঘ তার ‘শিষ্য’ বিজেপিকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নাগরিকপঞ্জির তালিকা একেবারেই ভুলে ভরা৷ তাই অবিলম্বে এর সংশোধন করতে হবে৷ তবে সেই সঙ্গে সময়ের মধ্যে এনআরসি(নাগরিকপঞ্জি) তালিকা তৈরির জন্য বিজেপিকে ধন্যবাদও জানিয়েছে৷ আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা কোনও আইন নয়৷ এতে কিছু ভুলচুক এতে রয়েছে৷ সরকারের উচিত সে ভুলগুলি দূর করার ব্যাপারে অগ্রসর হওয়া।’ সংঘর বৈঠকেএনআরসি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকে গিয়ে অসমে বসতি গড়েছেন এমন নাগরিকদের তালিকাছুট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ ব্যক্ত করা হয়েছে। সংঘের স্পষ্ট দাবি হিন্দুরা যেন কোনোভাবেই বিপদে না পড়েন তা দেখতে হবেই সরকারকে৷
বিজেপি এই এনআরসি তালিকার সমালোচনা করে বলেছে, সরকারের উচিত ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষায় এমন আইন প্রণয়ন করা যাতে বিদেশি ট্রাইবুনালে আবেদন নাকচ হয়ে গেলেও ভারতীয় নাগরিকরা সুরক্ষা পেতে পারেন।এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ৩১ অগাস্ট। ওই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লক্ষ মানুষ।আরএসএসের অধীনস্থ ২৫টি সংগঠনের ২০০ জনেরও বেশি এই সমন্বয় বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। লোকসভা বৈঠকের পর এ ধরনের বৈঠক এই প্রথম। বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডা, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এখানে সংগের সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসবলে বিজেপির উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাম মাধবকে সাফ জানান, তাঁরা নাগরিকপঞ্জির এই তালিকা নিয়ে একেবারেই খুশি নন৷ সেই সঙ্গে তিনি বিজেপির এই নেতাকে বেলন কীভাবে এত হিন্দুর নাম বাদ পড়ল তা নিয়ে যত দ্রুত কারণ অনুসন্ধান করেত হবে বিজেপিকে৷ এই সবায় সংঘর উপস্থিত অনেক সদস্যই অসমে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের ভূমিকা নিয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন৷
শুধু সংঘ নয় বাঙালি অধ্যুষিত নমনি অসমের বরাক ভ্যালির দাপুটে বিধায়ক শিলাদিত্য দেব পর্যন্ত প্রকাশ্যেই এই নাগরিকপঞ্জিকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন৷ এমনকী এই নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগও তিনি করেছেন৷ তাঁর সোজা কথা, বাঙালিদের অসম তথা উত্তর-পূর্ব থেকে তাড়াতেই এমন নাগরিকপঞ্জি করা হয়েছে৷ এদিকে সুপ্রিমকোর্ট নিয়োজিত প্রতীক হাজেলাকে নিয়েও অসমে বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপর ক্ষোভ জমা হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই তাঁর কুশপুত্তলিকা রাজ্যে পোড়ানো হয়েছে৷ তাঁর বিরুদ্ধে বাঙালি বিদ্বেষ ও স্বজনপোষণের অভিযোগ এনেছে বাঙালি সংগঠনগুলি৷ উল্টোদিকে অহমিয়া সহ উত্তর-পূর্বের আদিবাসী বেল স্বঘোষিতরা নাগরিকপঞ্জির সমর্থন করে পাল্টা প্রচার করছে৷ এমনকী তারা নাগিরক সংশোধনী বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে হঁশিয়ারী দিয়েছে৷