অয়ন বাংলা , নিউজ ডেস্ক ,নয়াদিল্লি:-প্রথম বার সংসদে গিয়েই মুখ খললেন জয় শ্রী রাম নিয়ে মানুষ খুনের বিষয়ে। প্রথমবারের সাংসদ৷ তবে কেন্দ্রের সমালোচনায় বারবারই সরব হতে দেখা গিয়েছে বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে৷ বুধবার ফের ট্যুইট করে কেন্দ্রে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন নুসরত৷ এদিন তিনি কবি ইকবালের কবিতা উদ্ধৃত করে বলেন কোনও ধর্ম একে অপরের মধ্যে হিংসা ছড়ানো শেখায় না৷ এগুলো মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত৷
ভারতের অখণ্ডতাকে ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ নুসরত এদিন বলেন যে ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তাঁরাই দেশের প্রকৃত ভালো চান৷ তাঁদের সমর্থন করেন বলেও এদিন জানান তৃণমূল সাংসদ৷
তাঁর মতে জয় শ্রী রাম ধ্বনির ধুয়ো তুলে দেশে আর্তনাদ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ এই ধ্বনি মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে৷ এদিন গণপিটুনিতে অভিযুক্তদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সাংসদ৷ তিনি বলেন তথাকথিত গোরক্ষকরা খাবারের নামে, ধর্মের নামে বিভেদ তৈরি করে চলেছে৷ অথচ আশ্চর্যভাবে দেশের কেন্দ্র সরকার চুপ৷ সব দেখেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেই৷
নুসরতের দাবি এই গোরক্ষকরা গরু পাচার, গোমাংস খাওয়ার নামে তাণ্ডব চালানো হচ্ছে গোটা দেশে৷ এই সব গোরক্ষকরা আসলে জঙ্গি৷ যারা দেশের মধ্যে থেকে অশান্তি তৈরি করে চলেছে৷ এরা সবাই দেশের শত্রু৷ একযোগে এদের মোকাবিলা করতে হবে৷
উল্লেখ্য, বুধবারই গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা ক্ষেত্রের ব্যক্তিত্বরা উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে৷ এঁদের মধ্যে ছিলেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, গৌতম ঘোষ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়দের মত ব্যক্তিত্ব৷ ছিলেন চিত্র পরিচালক কেতন মেহতা, অঞ্জন দত্ত, অনুপম রায়, আদুর গোপালকৃষ্ণণ, রূপম ইসলাম, ঋদ্বি সেন, ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ, সংগীতশিল্পী শুভা মুদগলরাও৷
মোট ৪৯ জন ব্যক্তিত্বর সই করা এই চিঠি বুধবার গিয়ে পৌঁছয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে৷ এদিন বিদ্বজনেদের চিঠিতে জয় শ্রীরাম ধ্বনির প্রভাব থেকে গণপিটুনি,এমনই বহু বিষয়ের উল্লেখ করা হয়৷ দলিত থেকে মুসলিমদের গণপিটুনি, অসহিষ্ণুতার মতো বিষয় ছিলই৷ সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হয় জয় শ্রীরাম স্লোগানের প্রভাবে আইন শৃঙ্খলাতেও যে একটা প্রভাব পড়ছে, পরিস্থিতি অশান্ত হচ্ছে এই বিষয়টির ওপরেও৷
তবে বিষয়টি স্বীকার করেনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ কেন্দ্রের মোদী সরকার দেশের নাগরিকদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে বলে জানানো হয়৷ রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষণ রেড্ডি ২০১৪ সালে মোদী সরকারের ক্ষমতায় আসার পর কোনও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন৷ তিনি এও জানান, দেশে ২০১৪ সালের পর থেকে কোনও কারফু জারি হয়নি৷ ২০১৩ সালে যেখানে ৮২৩টি হিংসার ঘটনা ঘটেছিল. ২০১৮ সালে তা নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ৭০৮য়ে৷