মিলছে না অঙ্ক ভোট গণনায় হিষেবের গরমিল প্রশ্ন উঠছে ইভিএমের স্বচ্ছতা নিয়ে

Spread the love

অয়ন বাংলা, ওয়েবডেস্ক:-গোটা দেশের গেরুয়া ঝড়ের অঙ্ক জয়ের আনন্দে ভাটা ফেলছে। ‘অঙ্ক মিলছে না!’ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে মোদীর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠটা প্রসঙ্গে এমনটাই জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সেই আশঙ্কাকেই এবার স্বীকৃতি দিল ‘নিউজ ক্লিক’ নামের এক সংবাদসংস্থা। বেশ কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্রে সমীক্ষা চালিয়ে তাদের দাবি, এমন একাধিক কেন্দ্র রয়েছে যেখানে মোট ভোটদাতার তুলনায় দেখা গিয়েছে, প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা বেশি। সেই সমস্ত জায়গাতে হাসতে হাসতে বিপুল সংখ্যক লিড পেয়ে জয় পেয়েছে বিজেপি।ওই নিউজ পোর্টালের তরফে দেশের আটটি কেন্দ্রে চালানো হয়েছিল সমীক্ষা। যার মধ্যে ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত কেন্দ্র বিহারের পাটনা সাহিব ও বেগুসরাই। যে সমস্ত কেন্দ্রের বিরোধীদের বিপুল ভোটে হারিয়ে জয় পেয়েছে বিজেপি। তবে ভোট গণনায় যে ধরণের কারচুপির বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে তাতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আর এই বিষয়টি যদি সত্য হয় তবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে রীতিমতো বিশ্বয় প্রকাশ করেছেন দেশের প্রাক্তন ৩ নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচন কমিশনের থেকে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন তারা।ওই সংবাদমাধ্যমের তরফে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা কিছুটা এইরকম, বিহারের পাটনা সাহিব কেন্দ্রে এবার প্রার্থী হয়েছিলেন দুই হাইভোল্টেজ প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ ও কংগ্রেসের শত্রুঘ্ন সিনহা। এই কেন্দ্রে নথিভুক্ত মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ২০,৫১,৯০৫ জন। যেখানে মোট ভোটদাতা ছিলেন ৪৬.৩৪ শতাংশ। ভোট গণনার দিন দেখা যায়, রবিশঙ্কর প্রসাদ ভোট পেয়েছেন ৬ লক্ষ ৭ হাজার ৫০৬ টি। পাশাপাশি, শত্রুঘ্ন পেয়েছেন ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৮৪৯ ভোট। এছাড়া অন্যান্যরা পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭০৯ টি ভোট। অর্থাৎ মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৯ লক্ষ ৮২ হাজার ২৮৫। কিন্তু মোটের হিসাবে সংখ্যাটা হওয়া উচিৎ ছিল ৯ লক্ষ ৫০ হাজার ৮৫২। এই ৩১ হাজার ৪৩৩ টি ভোট কোথা থেকে এল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।একই চিত্র দেখা গিয়েছে বেগুসরাইয়ে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র ছিল যথেষ্ট হাইভোল্টেজ এখানে বিজেপির তরফে দাঁড়িয়ে ছিলেন গিরিরাজ সিং। পাশাপাশি, সিপিআইয়ের তরফে প্রার্থী ছিলেন কানহাইয়াকুমার। এই কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১৯,৫৪,৪৮৪ জন। ভোটদাতা ছিলেন শতাংশের হিসাবে ৬১.২৭। এখানে প্রার্থীদের মোট ভোটার দাতার সংখ্যা ছিল ১১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫১২। অথচ প্রার্থীদের মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ লক্ষ ২৫ হাজার ৫৯৪। অর্থাৎ ২৮ হাজার ০৮২ ভোট এসেছে বেশি। শুধু এই দুই কেন্দ্র নয়, একইচিত্র দেখা গিয়েছে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যের একাধিক কেন্দ্রে। তবে ওই সংবাদ সংস্থা মোট ৮ টি কেন্দ্রের উপর সমীক্ষা চালিয়েছিল। যার প্রতিটি জায়গাতেই উঠে এসেছে এই গরমিল।

আর এইখান থেকেই উঁকি দিচ্ছে সন্দেহ। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিজেপির এই বিপুল সংখ্যক ভোট পাওয়ার প্রেক্ষিতে মমতা আগেই জানিয়ে ছিলেন, বহু কেন্দ্রে আগে ইভিএমে ১ লক্ষের প্রোগ্রামিং করে দেওয়া ছিল। যদিও তা নিয়ে এখনও তদন্ত না হলেও, গণনাতে যে কারচুপি হয়েছে তা প্রকাশ্যে এল এই রিপোর্টে। যত দিন যাবে ইভিএমের স্বচ্ছতা ক্রমশ প্রশ্ন উঠে আসবে কারণ সত্য ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.