বেহালা থেকে মন্ত্রী হতে পারেন রত্না চট্টোপাধ্যায়, বিষ্ণুপুর থেকে দিলীপ মণ্ডল
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : রাজ্যে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর টানা তৃতীয় বারের জন্য গত ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২ মে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই বাংলার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে এবার কোন কোন বিধায়ক মন্ত্রীসভায় স্থান পেতে চলেছেন। তবে বেশ কিছু নতুনরা মন্ত্রীসভায় স্থান পেতে চলেছেন বলে খবর। অন্যান্যবারের মতো এবারেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আশাতীত ভালো ফল হয়েছে তৃণমূলের। যারফলে এই জেলা থেকে় আরও দু’য়েক জনকে নতুন মুখ হিসেবে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে বলে জানাচ্ছে একটি সূত্র। সেক্ষেত্রে বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকে রত্না চট্টোপাধ্যায় ও বিষ্ণুপুর থেকে দিলীপ মণ্ডলের নাম নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক পরিবারের ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা রত্নার রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা নতুন নয়। স্বামী কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বাবা মহেশতলার বর্তমান বিধায়ক দুলাল দাস এমনকি তাঁর মা প্রয়াত কস্তুরী দাসও ছিলেন বিধায়িকা। স্বাভাবিক কারণেই রত্নার রাজনীতির পাঠ এক্কেবারে মুখস্থ। এমনকি রাজনীতি বাদেও সমাজসেবার কাজেও তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষেরা।
প্রসঙ্গত: তাঁর স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের টানা ৭ বারের কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার ২ বারের মেয়র ও রাজ্যের তিনটি দফতরের মন্ত্রী। উল্লেখ্য, বছর তিনেক আগে তিনি বিজেপিতে চলে যান। যারফলে বেহালা পূর্বের বিধানসভাটি বিধায়ক শূন্য ও বেহালার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডটি কার্যত: কাউন্সিলরহীন হয়ে পড়ে। সেইসময় থেকে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে নাগরিক পরিষেবা যাতে ব্যাহত না হয়, তার দায়িত্ব দীর্ঘদিন ধরেই সামলাচ্ছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। এমনকি করোনা শুরুর সময় থেকে লকডাউন ও পরবর্তী কঠিন সময়ের মধ্যেও এলাকার সমস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন রত্না…. এমনটাই খবর স্থানীয় সূত্রের।
সবচেয়ে বড় কথা, বেহালা পূর্বের যিনি বিধায়ক ছিলেন অর্থাৎ শোভন চট্টোপাধ্যায় তিনি রাজ্যের তিনটি দফতরের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ছিলেন। সেই সূত্র ধরেই এই এলাকার মানুষও চাইবেন এই কেন্দ্রে রত্নাদেবী মন্ত্রী হোন। এব্যাপারে রত্না চট্টোপাধ্যায়য়ের প্রতিক্রিয়া চাইলে তিনি বলেন, “আমি তৃণমূলের একজন সৈনিক মাত্র, তাই দিদি আমাকে যে দায়িত্ব দেবেন সেটাই পালন করবো…..।”
পাশাপাশি বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের দীর্ঘ দিনের বিধায়ক দিলীপ মণ্ডলও মন্ত্রী পদের দাবিদার। কারণ তিনি তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ২০০১, ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ এ এই চারটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। মাঝে একবার ২০০৬ সালে তিনি সিপিএম-এর আনন্দ বিশ্বাসের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এলাকার মানুষের প্রত্যাশা চারবারের বিধায়ক দিলীপ মণ্ডল এবার নিশ্চিতভাবে মন্ত্রীসভায় স্থান পাচ্ছেন। পৈলানের বাসিন্দা স্বপন নস্কর নামে এক ব্যক্তি বললেন, “অনেকে একবার নির্বাচনে জিতেই রাজ্যে মন্ত্রী হয়েছেন, সেক্ষেত্রে আমাদের দিলীপ মণ্ডল চারবারের বিধায়ক, তাই এবার তিনি নিশ্চিত মন্ত্রী হচ্ছেন….” এব্যাপারে দিলীপ মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া চাইলে তিনি বলেন, “মন্ত্রী হলে সাধারণ মানুষের জন্য সামগ্রিক উন্নয়ন করা আরও অনেক সহজ হয়ে যাবে….।”