জলাজঙ্গলা রাস্তা আতঙ্কে বন্ধ হচ্ছে স্কুল, সমস্যায় কান্দির বাগানপাড়া। রাস্তা তৈরির দাবি।
জৈদুল সেখ,কান্দী :- রাস্তার অভাবে জল কাদার উপর দিয়ে যেতে হয় মোতড়া গ্রামের বাগান পাড়া! পাঁকা রাস্তার দাবি এলাকাবাসীর
স্কুল থেকে শুরু করে বাড়ির সমস্ত কাজ করতে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা জল কাঁদা বিষাক্ত সর্পকুলে ভর্তি। মাঠের ফসল নেওয়া থেকে শুরু করে বাজার হাট করে ফিরতে হয় জল কাঁদা ভরা রাস্তার উপর দিয়ে। মোতড়া গ্রামের পাঁকা রাস্তা থেকে বাগান পাড়া প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিটার রাস্তা জল জঙ্গল কাঁদা! রাস্তার অভাবে বন্ধ হতে চলেছে ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল যাওয়া। তাছাড়া বিয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ থমকে গিয়েছে মোতাড়ার বাগান পাড়া এলাকায়।
প্রসঙ্গত মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার অন্তর্গত মোতড়া গ্রামের উত্তর পূর্বে বাগান পাড়া – মাঠাপাড়ায় প্রায় ৩০ – ৪০ পরিবার দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বসবাস করছে। বেশিরভাগই দারিদ্র্য পরিবার, ইঁটের গাঁথনি টিনের ছাউনি। যদিও অনেকেই সৈয়দি আরবে কাজে গিয়ে কষ্ট করে কয়েকজন পাকা বাড়ি তৈরি করেছে। বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ফলে মাঠের ফসল অর্থাৎ ধান থেকে শুরু করে পাঠ শাকসবজি বাড়িতে নিয়ে আসতে সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ একমাত্র রাস্তা জল কাদা জঙ্গল সর্পকুলে ভরা। সবচেয়ে বড়ো সমস্যায় পড়েছে স্কুল যাওয়া ছাত্র ছাত্রী এবং তাদের পরিবার।
এ বিষয়ে বাগান পাড়ার জরিনা বিবি বলেন ” আমার স্বামী বিদেশে থাকে দুই মেয়েকে প্রতিদিন কোলে করে স্কুল কিংবা প্রাইভেটে নিয়ে যেতে হয়। বড়ো মেয়েকে সাইকেল কিনে দিয়েছি কিন্তু সে সাইকেল অন্য পাড়ায় রেখে আসতে হয়। কারণ এই রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালানো দুরের কথা হেঁটে নিয়ে আসাও সম্ভব নয়। বৃষ্টির পর থেকে আরও বিপদ। এই দুদিন আগে স্কুলে মিড ডে মিল আনতে পাঠিয়েছিলাম, বাড়িতে ধানের জন্য আমি যেতে পারিনি, রাস্তায় একটি সাপে মেয়েকে তাড়াচ্ছিল তার পর থেকে মেয়ে বাড়ি থেকে একাই বের হচ্ছে না। ”
মোতড়া গ্রামের বিশিষ্ট শিক্ষক হজরতোল্লা সাহেব বলেন ” এই রাস্তাটা এক সময়ে মোতড়া গ্রামের একমাত্র রাস্তা ছিল। এই মেঠোপথ ধরে কান্দি হাজার পুর নবগ্রাম এবং মহলন্দী খুব সহজেই মানুষ যাতায়াত করতে পারত। কিন্তু কিছুটা দুরে পাশাপাশি একটা পাঁকা রাস্তা হয়ে যাওয়ার ফলে এই মেঠোপথে আস্তে আস্তে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যদিও মাঠের কাজে এখনো ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এখানে বসতি গড়ে উঠেছে। এই পাড়ার ছেলেমেয়েরা খুব কষ্টে যাতায়াত করে। তাছাড়া মাঠের ফসল তুলতে খরচ বেশি হয়ে যায়। রাস্তাটা পাঁকা করা খুব দরকার।”
এ বিষয়ে মোতড়া অর্থাৎ গোকর্ণ দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের প্রধানের প্রতিনিধি মজিবুর সেখ বলেন “বাগানপাড়া রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা অনেক আগেই নিয়েছি। ইতিমধ্যেই ঢালায় রাস্তার জন্য স্কিম দেওয়া হয়েছে আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হয়ে যাবে ”
এখন দেখার বিষয় ছাত্র ছাত্রীরা পাঁকা রাস্তায় হাঁসি মুখে হাটতে পারবে নাকি জল জঙ্গল কাঁদায় এলাকাবাসী কষ্টেই চলাচল করবে!