বিজেপি’র দক্ষিন কলকাতা জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ধর্ষনের গুরুতর অভিযোগ
পরিমল কর্মকার (কলকাতা): বিয়ের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ উঠল বিজেপি’র দক্ষিন কলকাতা জেলা সভাপতি সোমনাথ ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে। বুধবার তার বিরুদ্ধে হরিদেবপুর থানায় এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপি’রই এক প্রাক্তন মহিলা কর্মী।
বিজেপির প্রাক্তন এক মহিলা কর্মীর অভিযোগ, দিনের পর দিন বিয়ের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন সোমনাথবাবু। শুধু তাই নয়, নানা অছিলায় তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাও হাতিয়েছেন তিনি।
অভিযোগকারিনী ওই মহিলা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে তিনি বিজেপি’তে যোগদান করেন। সেই সূত্রেই পরিচয় হয় তৎকালীন বিজেপি দক্ষিন কলকাতা শহরতলী জেলা সভাপতি সোমনাথ ব্যানার্জীর সঙ্গে। পরিচয়ের পর উচ্চপদ পাইয়ে দেওয়ারও আশ্বাস দেন বিজেপি’র জেলা সভাপতি। প্রতিশ্রুতি মতো জেলা শিক্ষক সেলের কনভেনরও করা হয় তাকে। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।
সংবাদমাধ্যমকে ওই মহিলা জানান, দিনের পর দিন তাকে বিয়ের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন সোমনাথ বাবু। উপরন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অছিলায় তার কাছ থেকে হাজার পঞ্চাশেক টাকাও আত্মসাৎ করেছেন বিজেপি’র জেলা সভাপতি। এইসব কথা জানাজানি হতেই তাকে শিক্ষক সেলের কনভেনরের পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, সোমনাথবাবুর একটি ১৯/২০ বছরের ছেলে রয়েছে। অন্যদিকে ওই মহিলারও মেয়ে রয়েছে। সুতরাং “সব জেনে শুনেও কি করে সোমনাথ বাবুর দেওয়া বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করলেন ?” সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে ওই মহিলা বলেন, “আমরা দুজনেই ডিভোর্স নিয়ে বিয়েটা করবো, এটাই ঠিক হয়েছিল।” কিন্তু সোমনাথ বাবুর কাছ থেকে প্রতারিত হওয়ার পরই তিনি দল ছেড়ে দেন, বলে জানান তিনি।
বিজেপি’র কলকাতা দক্ষিণ শহরতলী জেলার প্রাক্তন দুই সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ রায় ও বিমল সেন যৌথভাবে বলেন, “সোমনাথ বাবুর মহিলাঘটিত নানা বিষয় ও দলীয় তহবিলের টাকা তছরুপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা মুখ খুলেছিলাম বলে তিনি প্রভাব খাটিয়ে আমাদের দুজনকেই ২০১৮ সালে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেন। এ ব্যাপারে আমরা বিজেপির রাজ্য কমিটি এমনকি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়েও কোনও সুরাহা পাইনি। উল্টে কলকাতা দক্ষিণ শহরতলী জেলা সভাপতির সঙ্গে দক্ষিন কলকাতারও সভাপতি করে তাকে কার্যত: “প্রমোশন” দেওয়া হলো। আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপির উচ্চস্তরের নেতৃবর্গরা তখনই যদি পদক্ষেপ নিতেন তাহলে জেলায় এই কলঙ্কিত ঘটনা ঘটতো না।”
এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি সোমনাথ। ব্যানার্জী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে রূপকথার সব গল্প তৈরি করা হচ্ছে।” ওই মহিলার সঙ্গে তার এই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, ওই মহিলা অন্য দলে নাম লেখাবার জন্য বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন।