বঙ্গদর্পণ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা ‘সুন্দরী সুন্দরবন-২’ -এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন স্বামী বিশ্বাত্মানন্দজি মহারাজ
————————————————————
পরিমল কর্মকার, কলকাতা : বঙ্গদর্পণ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা ‘সুন্দরী সুন্দরবন-২’ – এর মলাট উন্মোচন করলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দজি মহারাজ। সংখ্যাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে স্বামী বিশ্বাত্মানন্দজি মহারাজ বলেন, “বঙ্গদর্পণ পত্রিকার এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা। সুন্দরবনকে জানতে হলে এই সংখ্যাটি সকলেরই ঘরে রাখা উচিত। বহু অজানা তথ্য এই সংখ্যাটির মধ্যে আছে। এই বিশেষ সংখ্যার সাফল্য কামনা করি।”
বঙ্গদর্শন পত্রিকার এই বিশেষ সংখ্যার দ্বিতীয় সংখ্যাটি তুলে দেওয়া হয় বিশিষ্ট জাদুকর পি. সি সরকার (ইয়ং)-এর হাতে। তাঁর হাতে সংখ্যাটি তুলে দেন ব্ঙ্গদর্পণ পত্রিকার সহ-সম্পাদক শমী তরফদার। পি.সি. সরকার (ইয়ং) এই সংখ্যাটি দেখে বলেন, ”এই সংখ্যাটি হাতে না পেলে হয়ত সুন্দরবন সম্পর্কে অনেক কিছুই আমার অজানা থেকে যেত। এই সংখ্যাটি সম্পাদকের অত্যন্ত পরিশ্রমের একটি ফসল। বঙ্গদর্পণ পত্রিকার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।”
সুন্দরবন নিয়ে বহু দুষ্প্রাপ্য সব প্রবন্ধ এই সংখ্যাটির মধ্যে আছে। এই সংখ্যাটিকে তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে পুণ্যতীর্থ গঙ্গাসাগর। প্রথম পর্বে লিখেছেন- বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রণবেশ সেন, স্বামী বিশ্বাত্মানন্দজি মহারাজ, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, জয়া মিত্র, সুভাষচন্দ্র আচার্য্য, নরোত্তম হালদার, চঞ্চলকুমার ঘোষ, রণজিৎ সরখেল, দেবাশিস পাঠক, উৎপলেন্দু মণ্ডল, মনোরঞ্জন রায়, প্রবীর চক্রবর্তী, শমী তরফদার, হিমাদ্রিশেখর মণ্ডল প্রমুখ।
সংখ্যাটির দ্বিতীয় পর্বে -তুষার কাঞ্জিলাল কে নিয়ে লিখেছেন প্রাক্তন সেচ মন্ত্রী সুভাষ নস্কর। ‘বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য সুন্দরবনের মানুষ দায়ী নয়’ লিখেছেন-বিজ্ঞানী শান্তিপদ গণচৌধুরী। বিশ্বসভ্যতার পাদপ্রদীপে সুন্দরবনের বিবিমা লিখেছেন অমর কৃষ্ণ চক্রবর্তী। সুন্দরবনে ডেভেলপমেন্ট নয়, চাই কনজারভেশন লিখেছেন সঞ্জিত কুমার সাহা। পদ্মশ্রী অরুণোদয় মণ্ডল কে নিয়ে লিখেছেন শমী তরফদার। গিরীন্দ্রনাথ মণ্ডল ও তাঁর সুন্দরবন ভাবনা লিখেছেন হাজারী লাল মণ্ডল। প্রাচীন সুন্দরবনের তাঁত ও লবণ শিল্প লিখেছেন শশাঙ্ক মণ্ডল। সুন্দরবনের তেভাগা আন্দোলন নিয়ে লিখেছেন আনন্দময় মণ্ডল। সংখ্যাটিতে আছে ডাক্তার গোপীনাথ বর্মণকে নিয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ। গোসাবায় হ্যামিল্টন স্টেট-এর ম্যানেজার ডাক্তার গোপীনাথ বর্মণকে নিয়ে লিখেছেন তুষার কাঞ্জিলাল ও বিশিষ্ট সাংবাদিক তাপস গঙ্গোপাধ্যায়। সুন্দরবনের খেয়া নিয়ে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ লিখেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বরেন্দু মণ্ডল। সংখ্যাটিকে আছে কুমিরমারির ইতিহাস। ‘ইতিহাসের আলোকে কুমিরমারি’ লিখেছেন কুমিরমারি ভূমিপুত্র ও বিশিষ্ট লেখক ছত্রধর বিশ্বাস। সুন্দরবনের সাপ নিয়ে দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছেন প্রভুদান হালদার। এছাড়াও আছে বিধ্বংসী ঝড় নিয়ে লেখা – ‘আয়লার এক দশক পর বুলবুল’- হিমাদ্রিশেখর মণ্ডল। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ ‘সুন্দরবনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তার সুরক্ষা’- সুভাষচন্দ্র আচার্য্য।
তৃতীয় পর্বে আছে সাহিত্য বিভাগ। কবি বিনোদ বেরা কে নিয়ে একটি দীর্ঘ লেখা লিখেছেন বিনোদ বেরার অতি ঘনিষ্ঠ বর্ষিয়ান কবি বিশ্বজিৎ মিত্র। মনোজ বসু ও শিবশঙ্কর মিত্রের ছোটগল্প নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ লিখেছেন শ্যামাপ্রসাদ কলেজের অধ্যাপক ড. দেবজ্যোতি মণ্ডল। সমীর রক্ষিতের ‘দুখের আখ্যান’ উপন্যাসটি লিখেছেন বিশ্বভারতীর গবেষিকা শ্রাবন্তী রায়। ১৭৬ পৃষ্ঠার এই বিশেষ সংখ্যাটির দাম ১০০ টাকা।
::বঙ্গদর্পণ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা ‘সুন্দরী সুন্দরবন’-২ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দজি মহারাজ। পাশে ব্ঙ্গদর্পণ পত্রিকার সম্পাদক হিমাদ্রিশেখর মণ্ডল।
ছবি : শমী তরফদার।

