নিউজ ডেস্ক:- গোটা দেশ যখন করোনা আক্রান্ত এর আতঙ্কে ঠিক সেই সময় নিজেদের অসাবধনতাই বিপদ ডেকে আনল তাবলীগ জামাতের লক । রাজধানী দিল্লির একটি মসজিদের তাবলিগ জামাতে অংশ নেওয়া ৬ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তেলেঙ্গানায়। দিল্লির পশ্চিম নিজামুদ্দিনে তবলিগ-ই-জামাতের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর তারা করোনায় আক্রান্ত হন। মঙ্গলবার তাদের মৃত্যু হয়েছে। যে ৬ জন মারা গেছেন তাঁদের মধ্যে ২ জন মারাগেছেন গান্ধি হাসপাতালে, আর অ্যাপোলো, গ্লোবাল, নিজামাবাদ এবং গাড়ওয়ালের হাসপাতালের প্রতিটায় মারা গেছেন ১ জন করে রোগী। এর আগে কাশ্মীরের শ্রীনগরেও একজনের মৃত্যু হয়, যিনিও ওই জমায়েতে অংশ নেন।
গত ১ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে দিল্লির ওই মসজিদে অন্তত ২ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল। দিল্লিতে ওই মসজিদে শুধু ভারত নয়, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কিরগিজিস্তান থেকেও বিভিন্ন মানুষজন এসে ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন। দেশে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত রোধে ২১ দিনের লকডাউন চলছে। অথচ এই মধ্যেই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে দিল্লির পশ্চিম নিজামুদ্দিনে তবলিগ-ই-জামাতের “মার্কাজ” এ এখনও কমপক্ষে ১,৪০০ জন লোক একসঙ্গে রয়েছে বলে খবর। ফলে ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ‘সিল’ করে দেয়া হয়েছে গোটা এলাকা।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করানো হচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতালে। কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে ২ হাজার মানুষকে। দেশে এই প্রথম এক স্থান থেকে এত মানুষের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে ওই জমায়েতে অংশ নেওয়া ৯ ব্যক্তির মধ্যে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে এক ব্যক্তির স্ত্রীর দেহেও মিলেছে ওই মারণ ভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মরিয়া অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার। এই সংক্রমণের ঘটনায় দিল্লির ওই মসজিদের মওলানার বিরুদ্ধে পুলিশকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও এই মুহুর্তে জীবাণুমুক্ত করার জন্য গোটা মসজিদটিকেই সিল করে দেওয়া হয়েছে।
আশঙ্কাই সত্যি হল। দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার ধর্মীয় অনুষ্ঠান তবলিগে যোগ দেওয়া আরও সাতজনের মৃত্যু হল। ছয়জন তেলেঙ্গানার বাসিন্দা। এর আগে শ্রীনগরেও এক ধর্মপ্রচারকের মৃত্যু হয়। রবিবার মুম্বইয়ে এক ফিলিপিন্সের নাগরিকের মৃত্যু হয়। তিনিও দিল্লির মসজিদের তবলিগ জামাত অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। এদিকে যাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ২৪ জনের দেহে জীবাণুর উপস্থিতি মিলেছে। এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই সামাজিক সংক্রমণের আশঙ্কা আরও কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে। আশঙ্কা, এক ধাক্কায় দেশে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণও। গোটা ঘটনা অনুষ্ঠানের আয়োজকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দিল্লি সরকার। পাশাপাশি মার্কাজ নিজামুদ্দিনে থাকা ৮০০ জনকে মঙ্গলবার সকালে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে তবলিগ জামাতের মার্কাজ নিজামুদ্দিনের