ওয়েব ডেস্ক:- মধ্য কলকাতায় অবস্থিত রাজভবন, আকাশবাণী ভবন, ফোর্ট উইলিয়াম, ময়দান ও সংলগ্ন এরিয়া, ইডেন গার্ডেনস, রাজভবন, বিধানসভা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব, মোহনবাগান ক্লাব সহ ২৫৫৫ বিঘা জমির ভাড়া সরকার শুধুমাত্র মাসিক টাকা প্রদান ১৫৮ এবং এটিও ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। মুতাওয়াল্লি মৌলানা আবুল বারকাতের ৯৯ বছর বয়সে মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ও উত্তরাধিকারী আবু নাঈম সিদ্দিকীকে সরকার এক টাকা ও প্রদান করেনি তার জমি ব্যবহারের জন্য। বিতাড়িত বাংলার নবাব, বিহার ও উড়িষ্যা মুতাওয়াল্লি মাওলানা আমসুদ্দিন ও মাওলানা মাসীউদ্দিন সাহেবকে ২৫৫৫ বিঘা জমি দান করেছিলেন, সিতাপুর মাদ্রাসা, মসজিদ ও মুতাওয়াল্লির পরিবারের খরচ চালানোর জন্য।
৪০ ফুট দীর্ঘ সেই দলিল হাতে নায়িম সিদ্দিকী
সেই জমি এখন গভর্নর হাউস (রাজ ভবন), ফোর্ট উইলিয়াম, ময়দান এবং এর আশেপাশের এলাকাগুলির মতো অনেক সরকারি সম্পত্তি দখল করে আছে। হুগলি জেলার সিতাপুর মাদ্রাসা নবাব আলীবর্দী খান এর আমলে থেকেই প্রাচীনতম মাদ্রাসা। অর্থের অভাব মানে সিতাপুর মাদ্রাসাকে অবহেলা করা হচ্ছে। প্রধান মাদ্রাসা ভবন ও হোস্টেল ভবন ও মসজিদ সংস্কারের প্রয়োজন। ভবনটির অবস্থা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বর্তমান মুতওয়ালিকে উদ্বিগ্ন করছে।
আবু নাঈম সিদ্দিকী গর্বিতভাবে জানালেন যে তার পূর্বপুরুষ ফোর্ট উইলিয়াম, রাজ ভবন, আকাশ বানী ভবন, ময়দান (ইডেন গার্ডেন, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব, মোহন বাগান ক্লাব স্টেডিয়ামসহ) এর প্রকৃত মালিক ছিলেন। সরকার তার মালিকানা দাবিটি গ্রহণ করবে এবং তার জমি ব্যবহার করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দেবে, সে সম্পর্কে তিনি কখনই নিশ্চিত নন।
কিন্তু এই অবিচার ওয়ারেন হেস্টিংসের দিন থেকে জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, নরসিংহ রাও, এপিজে আব্দুল কালাম, জ্যোতি বসু থেকে গোপালকৃষ্ণ গান্ধী পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছে।
১৫৮ টাকা ভাড়ার চুক্তিপত্র
মাওলানা মসিউদ্দিনের উত্তরাধিকারী, আবু নাঈম সিদ্দিকী, সিতাপুর মাদ্রাসা ওয়াকফ (শেষাংশ) এর বর্তমান মুতাওয়াল্লির মূল জমি দানকারী মাওলানা মাসীউদ্দিনের উত্তরাধিকার সূত্রে জানা গেছে যে নবাব আলিবর্দী খানের দ্বারা কেবলমাত্র ২৫৫৫ বিঘা নয়, প্রায় ১৫০০০ বিঘা জমি তার পূর্বপুরুষকে দান করা হয়েছিল। ৪০ ফুট দীর্ঘ যে জমির দলিল।
২০০৬ সালে সাচার কমিটি রিপোর্ট যখন প্রকাশিত হয় তখন তাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ছিল। তা হল- বেদখল, জবরদখল হওয়া ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি দখলমুক্ত করে সেগুলি মুসলিম সমাজের শিক্ষা বিস্তার ও সামাজিক কাজে লাগাতে হবে। ভারতের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের পর সবচেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি পশ্চিমবঙ্গে। দীর্ঘ সুলতানি শাসন, নবাবী শাসন ও তুর্কি শাসনের ফলে বাংলার মাটিতে বিশেষ করে খণ্ডিত পশ্চিমবাংলায় ওয়াকফ সম্পত্তির পরিমাণ বেশি। ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত ওয়াকফ সম্পত্তি সব মিলিয়ে পশ্চিমবাংলার মাটিতে লক্ষাধিক ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। এই সম্পত্তির সংখ্যা কত, তার তথ্য পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোর্ডের কাছে সঠিক ভাবে নেই।
সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী সমগ্র ভারতে ৬ লক্ষ একর ওয়াকফ জমি রয়েছে। ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা ও রেল মন্ত্রকের পর সবচেয়ে বেশি জমি রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে। ওই জমি থেকে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা আয় হতে পারে যা মুসলিম সমাজের নানান উন্নয়ণ মূলক কাজে লাগানো যায়।
কিন্তু সেই ধরনের কোনও উদ্যোগ ভারত সরকার বা রাজ্য সরকার গুলির দেখা যায়নি। কেবলমাত্র ভোটের সময় মুসলিম এলাকাগুলিতে এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি তাদের মুসলিম নেতাদের দিয়ে মায়া কান্না করিয়ে নিয়েছে। তারপর ভোট ফুরানোর পর আর কাউকে দেখা যায়নি বা যায়না।
সাচার কমিটির অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ২০০ টি। যার মাত্র ২৩ হাজারের মতো সম্পত্তি রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের আওতায়। প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার সম্পত্তির কোন হদিস নেই। নেতা মন্ত্রী, প্রভাবশালীদের দখলে।
![](https://ayanbangla.in/wp-content/uploads/2022/06/tea.jpeg)
![](https://ayanbangla.in/wp-content/uploads/2022/05/Ads.jpeg)