তৃণমলেই থাকছেন জানালেন দুই বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও বিশ্বজিৎ কুন্ডু ,বললেন ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল দিদির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিব

Spread the love

নিউজ ডেস্ক :- দলেই  থাকছেন জিতেন্দ্র তেওয়ারী । স্বীকার করলেন ভুল হয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদল ইস্যুতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। একের পর তৃণমূল বিধায়কদের দলত্যাগের সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হচ্ছে নানা জল্পনা। তবে তারই মাঝে লেগে রয়েছে ভোলবদল। নাটকীয়ভাবে দলত্যাগের পরেও শুক্রবার রাতে ঘাসফুল শিবিরে থাকার বার্তা দিয়েছেন আসানসোলের পুরপ্রশাসক থেকে সদ্য পদত্যাগ করা পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আর সেই একই পথ অনুসরণ করলেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুও।

রাতে মন্ত্রি অরুপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠকের পর জিতেন্দ্র বলেন পদত্যাগ করে ভুল করেছি, শুনেছি দিদি কষ্ট পেয়েছে, দিদির কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেব, তৃণমূলেই থাকছি। সৌগত রায়কে ফোন করে দলের থাকার বার্তা দিয়েছেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুন্ডু। এমনকী বেশ কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্যরা ফের ঘাসফুল শিবিরেই থাকার কথা জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারীর দল ত্যাগ করার পরেই তিনি তৃণমূল দল ছাড়ার ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। শুক্রবার বিকেলেও তিনি পরিষ্কার জানান যে তিনি আর কোন দলে নেই। বিজেপিতে যাবেন নাকি ঠিক করতে পারেননি এখনও।তাছাড়া তার বিজেপিতে যোগদান দেওয়ার আগেই আপত্তি জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় কিন্তু এই সব ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ নেতা কলকাতা সুরুচি সংঘ ক্লাবের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এর সঙ্গে বৈঠক করার পর 180 ডিগ্রি ঘুরে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, তিনি তৃণমূলী আছেন। দল ত্যাগ করে তিনি দিদিকে খুব দুঃখ দিয়েছেন তাই দিদির কাছে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেবেন। হ্যাঁ এটাই সত্য। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি ফের একথা জানান আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র এবং পাণ্ডবেশ্বর এর বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি।

জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান যে দল ত্যাগ করা তার ভুল হয়েছে। ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। আমারই দোষ ছিল, তাই আমি আবার ভুল ঠিক করে দিচ্ছি। তিনি বলেন যে আমার খুব খারাপ লেগেছে যে আমার জন্য দিদি নাকি খুব দুঃখ পেয়েছেন আমি দিদির কাছে আমার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেব।

উল্লেখ্য গত কয়েকদিন ধরে সংবাদের শিরোনামে রয়েছেন আসানসোল দুর্গাপুর এর প্রাক্তন মেয়র এবং পাণ্ডবেশ্বর বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি পৌর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কে একটি গোপন চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিতে স্রেফ রাজনৈতিক কারণের জন্য কেন্দ্র স্মার্ট সিটি মিশন এর কয়েক হাজার কোটি টাকা নিতে দেয়নি তার দল এ ভাষাতেই তিনি পৌর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কে চিঠি দিয়ে জানিয়ে ছিলেন।তবে জিতেন্দ্র তিওয়ারি এই গোপন চিঠি আর গোপন রাখেন নি কলকাতার মেয়র ও পৌর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জনসম্মুখে এনে তিনি পাল্টা জিতেন্দ্র তিওয়ারি কে আক্রমণ করেন এবং বলেন, জিতেন্দ্র নাকি বিজেপির ভাষায় কথা বলছেন। জিতেন্দ্র তিওয়ারি কে আক্রমণ করার সাথে সাথেই মেয়র এবং পৌর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দেন দলের দরজা খোলা আছে যারা বিজেপি তে যেতে চায় চলে যেতে পারে।

অন্যদিকে ফিরহাদ হাকিমের এই ভাষাকে ভালোভাবে নেননি পাণ্ডবেশ্বর বিধায়ক এবং আসানসোল দুর্গাপুর কর্পোরেশনের প্রাক্তন মিয়ার জিতেন্দ্র তিওয়ারি তিনি পাল্টা ফিরহাদ হাকিম কে আক্রমণ করে জানান তিনি যে কথা বলেছেন কনফিডেনসিয়াল বলেছেন। তাছাড়া তিনি বলেন তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষায় তো কথা বলেননি তিনি ফিরহাদের মত কলকাতাকে পাকিস্তান করে দেওয়ার কথাও বলেননি।

ফিরহাদ হাকিম ও জিতেন্দ্র তিওয়ারি তরজা চরমে পৌঁছাতেই বৃহস্পতিবার তিনি প্রথমে আসানসোলের পৌর প্রশাসক এর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন। তার আধঘন্টা পরে তিনি জেলা তৃণমূল সভাপতি পদ ছেড়ে দেন। এরপর তিনি দল থেকে পদত্যাগের চিঠিপত্র পাঠিয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দেয় যে তিনি আর দলে নেই। তিনি তৃণমূলের সাধারণ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে দিয়েছেন।

তবে এদিকে যখন আসানসোলে এই ঘটনা ঘটে চলেছে তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে ছিলেন । তিনি সেখান থেকেই জিতেন্দ্র তিওয়ারি কে ফোন করে বলেন মাথা ঠান্ডা কর 18 তারিখে এই সমস্যা নিয়ে বৈঠকের কথা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নাছোড়বান্দা জিতেন্দ্র তিওয়ারি রাগে টকবক করছেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা কোন কানের না দিয়ে, তিনি সরাসরি সেদিনই সদ্য দল ত্যাগী সাংসদ সুনিল মন্ডলের বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারী সাথে বৈঠক করতে উপস্থিত হন। বৈঠকের পর তিনি শুভেন্দু অধিকারী কে জননেতা এবং সাংগঠনিক নেতা বলে ভূয়শী প্রশংসা করেন।

সৌজন্য :- বঙ্গ রির্পোট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.