মাদ্রাসার চাকরিপ্রার্থীদের অনশনের মঞ্চে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র ও বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।
তাজমত সেখ ,কোলকাতা:- মাদ্রাসার বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অনশনের একাদশ দিবস। তারা অনশন বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন, বিকাশ ভবনের কাছে। মহামান্য হাইকোর্ট এর অনুমতি সাপেক্ষে টানা ১৪ দিনের অনশন কর্মসূচি।
মঞ্চে সকল স্তরের বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদ উপস্থিত হলেও মঞ্চে অদ্যাবধি উপস্থিত হন নি, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি। শুধু তাই নয়, চাকরিপ্রার্থীরা পাঁচ বছর ধরে কমিশনে ডেপুটেশন জমা করতে গেলেও কমিশনের চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারির দেখা মেলে না। অথচ বিগত ৩/৪ আগে মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আব্দুল মান্নান, বামফ্রন্ট সুপ্রিমো বিমান বসু এবং ভাঙর বিধানসভার বিধায়ক ও আই এস এফ চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকি। আর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র সজল ঘোষ এবং সর্বোপরি বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ৩১৮৩ টি পদে শিক্ষকশিক্ষিকা নিয়োগ করব বলে ২০১৩ সালে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। সেই সঙ্গে গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেটে উল্লেখ ছিল, ৩১৮৩ টি পদের সহিত লিখিত পরীক্ষার রেজাল্টের আগের দিন পর্যন্ত ভ্যাকান্সি আপডেট হয়ে নিয়োগ করা হবে। চাকরিপ্রার্থীদের মেরিট অনুযায়ী কমিশনের ওয়েবসাইট ও ডি আই অফিস গুলিতে প্যানেল প্রকাশিত হবে। বি.এড প্রশিক্ষণদের আগে নিয়োগ করা হবে। ২০১০ রুলস অনুযায়ী একাডেমিক ইভালুয়েশন দেওয়া হবে। কিন্তু মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন এর কোনোটিই করেন নি।
২০১৮ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এবং মাত্র ১৫০০ টি শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়। ভ্যাকান্সি আপডেট তো হলোই না, বরং ভ্যাকান্সি কমিয়ে দেওয়া হলো। পরবর্তী ফেজের অপেক্ষায় চাকরিপ্রার্থীরা দিন কাটায়। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও কোনো সমাধান। এরপর চাকরিপ্রার্থীরা আইনের দারস্থ হয়, মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট ২৬০০ জনের অধিক নিয়োগ করার অর্ডার দেয়। কিন্তু কমিশন তা অবজ্ঞা করে। এরপর মহামান্য হাইকোর্ট ১৯০ জনের কেসে একটি Consideration অর্ডার দিলেও কমিশন মান্যতা দেয়নি। ফলত চাকরিপ্রার্থীরা আজ পাঁচটি বছর ধরে কলকাতার রাজপথ জুড়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। বরাবর পুলিশ তাদের দমিয়ে দেয়, যার ফলে এবারে তারা কোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে এই অনশন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
আজকে বিকাশরঞ্জন বাবু, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন এবং চাকরিপ্রার্থীদের আইনের দারস্থ হবার পরামর্শ দেন। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পাশ প্রার্থী মঞ্চের তরফে জানানো হয়, আমরা মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের উত্তীর্ণ হয়েও আজো বঞ্চিত। অথচ পূর্বঘোষিত ৩১৮৩ ভ্যাকান্সির এখনো ১৫০০ টি সীট পড়ে আছে। আপডেট মিলিয়ে ভ্যাকান্সি প্রায় ১০০০০। অথচ নামমাত্র চাকরিপ্রার্থী পাশ করে বসে আছে। তারা দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে রাজপথে ঘুরছে। আমাদের প্রত্যেকের নিয়োগ চাই। স্বচ্ছ ও পূর্নাঙ্গ মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। আর যদি কমিশন নিয়োগ না করে তবে এই সংগ্রাম অন্তত কাল চলবে।