আন্তজার্তিক যোগ দিবস এবং কিছু কথা :- ডাক্তার ইয়ার আলী

Spread the love

ডাক্তার ইয়ার আলী.বুনিয়াদ পুর রুরাল হসপিটাল :-
কোন বিশেষ বস্তূ বা বিষয়কেন্দ্রিক দিবসযাপন বা দিবসকে সম্মান প্রদর্শন—ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী শির্কের পর্যায়ের বড়পাপ৷

তবে, আমার লিখার উদ্যেশ্য হল ভিন্ন৷ আন্তর্জাতিক বিশ্ব-যোগা দিবস নিয়ে অনেক ভাষণ, বক্তব্য শুনে থাকবেন৷ যোগা করলে ইমিউনিটি বাড়ে, দেহের রোগ-প্রতিরোধ বাড়ে৷ দেহ সুঠাম হয়৷ কিন্তূ, কীভাবে?

আমরা মুসলিমরা দৈনিক ৫ বার সর্বাঙ্গের চলন ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে অন্ততঃ ১৭ বার হাল্কা ব্যায়াম বা যোগা করি৷ দেহের জন্য স্ট্রেনাস বা ভারী ব্যায়াম বা যোগ উপকারের থেকে অপকার বেশী৷ সেটা কেন—বলছি৷ ধৈর্য্য ধরুন৷

আমরা বর্তমান যে প্রযুক্তি,অগ্রগতি ও মানসিক প্রতিযোগীতা ও প্রতিদ্বন্দিতার মধ্যে জীবনকে অতিবাহিত করছি—সেই পরিবেশে অনবরত স্ট্রেস আমাদেরকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে! ফলে, সার্বক্ষনিক স্ট্রেস-রেলেটেড এপিনেফ্রিন বা এড্রিনালিন যেটা সুপ্রারেনাল গ্লান্ড থেকে নিঃসৃত হয়, আমাদের রক্তে থেকে যাচ্ছে,আমাদের বিভিন্ন অঙ্গে কাজ করছে,লিভারে জমা হচ্ছে৷ অনবরত এড্রিনালিন সিক্রেশন হলে, তার গুণগতমান নষ্ট হয়ে এসিডিক ও ক্ষতিকর হয়ে যায়৷ যেটা দেহের প্রত্যেকটা কোষ ও অঙ্গের জন্য হানিকর৷ তাই,আমাদের সুস্থ দেহ ও মনের জন্য বিশ্রাম ও স্ট্রেস-ফ্রি জীবন-যাপনের দরকার৷ দীর্ঘায়ু কামনা করলে, জীবনের স্ট্রেস কমানো জানতে হবে, দুনিয়ার ব্যস্ততার জগত থেকে আমাদের মনকে দিনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করতে হবে৷ সর্বকাজে ও চিন্তায় একমাত্র রব আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল ও ভরসা করতে হবে৷ মনের এই অনুশীলন —জীবনের স্ট্রেস কমিয়ে দিবে৷ দেহে ও মনে প্রশান্তি আসবে৷

এখন, যদি ভারী বা স্ট্রেনাস এক্সারসাইজ বা যোগ করেন,তবে অতিরিক্ত ফিজিক্যাল স্ট্রেসের জন্য বেশী বেশী পরিমাণে এড্রিনালিন সিক্রেশন হবে৷ এমনিতেই ,জীবনের নানা স্ট্রেসের কমতি বা ঘাটতি নাই! তার উপর আবার অতিরিক্ত চাপাচাপি যোগে রক্তের ক্ষতিকর এড্রিনালিন বৃদ্ধি পাই৷ বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়৷ ফিজিক্যাল মুভমেন্টে বিভিন্ন মাশলের বৃদ্ধি ও গঠণ মজবুত হলেও, বিভিন্ন অঙ্গের হানি হবেই৷ ফলে, বিভিন্ন অঙ্গের ইনজুরি বা অক্সিডেশনে আয়ু কমে যেতে পারে বা সুস্থতা বিঘ্নিত হতে পারে৷ তাই,সুস্থ থাকতে হলে হাল্কা যোগ বা ব্যায়াম বেশী উপকারী৷

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, জিম বা ভারী এক্সারসাইজ করে ক্ষনিকের জন্য ওজন বা মেদ কমলেও সেটা স্থায়ী কক্ষনই থাকবেনা৷ কারণ, ওজন-বৃদ্ধির মূল কারণটা অবহেলিতই থাকে বলে৷

তাই, হাল্কা ধীর স্থির ফিজিক্যাল মুভমেন্ট —নিয়মিতভাবে, প্রতিদিন, নির্দিষ্ট নিয়মে করতে থাকলে ; দীর্ঘমেয়াদী ও সন্তোষজনক উপকার পাওয়া যায়৷

যে কোন এক্সারসাইজে ব্যবহৃত শক্তি বা যে শক্তি খরচ হয়—সেটা ব্লাড-ফ্যাট থেকে ব্যবহৃত হয়৷ ফলে, ব্লাড-ফ্যাট কমে৷ রক্তের ফ্যাট যত বেশী হবে, ততই রক্তে অক্সিজেন কমতে থাকবে৷ ব্লাড-ফ্যাট ও ব্লাড-অক্সিজেন ইনভার্সলি প্রোপোরশনাল৷ রক্তের অক্সিজেন স্যাচুরেশন যত কমবে, রক্তের এসিডিটি ততই বাড়বে৷ রক্তের এসিডিটি যত বাড়বে, রক্তের মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন জার্ম বা ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাস প্রলিফারেট করবে৷ ফলে, ইমিউনিটি এসিডিক মিডিয়ার স্ট্রং জীবানুর বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা ততই হারিয়ে ফেলবে৷ ইমুনিটি কমবে৷

সেইজন্য, নিয়মিত হাল্কা যোগ ( সর্বোত্তম দৈনিক ৫ ওয়াক্ত স্বলাতের পরিপূর্ণ হেফাজত করা) দেহের ইমিউনিটি বাড়াবে৷

এছাড়াও, মাংশপেশী বা লিগামেন্ট বা ফাসার ইনজুরি বা ব্যাথার জন্য বা জয়েন্টের পেইনের জন্য বিভিন্ন যোগ বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি কিছুটা ক্ষনিকের জন্য কাজ করে৷

তাই , আসুন আমরা দৈনিক হাল্কা হাল্কা করে ব্যায়াম বা যোগা করি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.