বেহালার কাউন্সিলরহীন ১২১ নম্বর ওয়ার্ডে সামাজিক কাজে অগ্রণীর ভূমিকায় সোমনাথ ব্যানার্জী
রাজশ্রী বসু (কলকাতা) : বেহালার ১৪ নম্বর বোরো কমিটির চেয়ারম্যান তথা ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ মানিকলাল চট্টোপাধ্যায় মারা গিয়েছেন ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর। তারপর এই ওয়ার্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও নির্বাচন হয়নি। যারফলে বছর খানেক ধরে এই ওয়ার্ডটি কাউন্সিলরহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই যেকোনো বিপদে-আপদে এখানকার মানুষ পুর পরিষেবা থেকে প্রায় বঞ্চিত বললেই চলে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা সোমনাথ ব্যানার্জী নামে এক যুবক। যিনি বাবন নামেই এলাকায় পরিচিত।
যেকোনো অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে ওষুধপত্রের যোগান দেওয়া, কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা-মাতাদের আর্থিক সাহায্য করা, এছাড়াও যেকোনো বিপদ আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা বাবনের দীর্ঘদিনের অভ্যেস বললেও ভুল হবে না। তার এই কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র এই ১২১ নম্বর ওয়ার্ডেই সীমাবদ্ধ নেই। বেহালার যে কোনও অঞ্চলের বিপদাপন্ন মানুষের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা, এমনটাই জানালেন তার প্রতিবেশীরা।
বছর খানেক হলো ১২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শূন্য। কিন্তু এলাকার মানুষের ভরসা বাবন। অখিল মাঝি নামে বেহালা কালীতলার এক প্রবীণ বাসিন্দা এই প্রতিবেদককে বললেন, “প্রয়াত মানিকবাবুর (কাউন্সিলর) অবর্তমানে বাবনের সামাজিক কর্মযজ্ঞ উল্লেখযোগ্য। লকডাউনের সময় প্রায়শ:ই দরিদ্র মানুষের খাবার-দাবার, চাল, ডাল, তেল,আলু, পেয়াজ ইত্যাদি বিতরণ করা ছাড়াও নানা ভাবে আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাবন (সোমনাথ)।” পাশে দাঁড়ানো মাঝ বয়সী এক ভদ্রমহিলা বললেন, “এই লকডাউনই নয়, এখনও করোনা আবহে প্রতিনিয়ত: চলছে বাবনের পরোপকারী কর্মকাণ্ড।
শুধু এই অখিলবাবু কিংবা ওই ভদ্র মহিলাই নয়, বেহালার যে কোনও প্রান্তে কান পাতলেই বাবনের (সোমনাথের) ভূয়সী প্রশংসা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু কেন ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এই প্রতিবেদক (সাংবাদিক) শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সরাসরি পৌঁছে গিয়েছিলেন বেহালার প্রফুল্ল সেন কলোনীতে, সোমনাথ বাবুদের ক্লাব দীপক স্মৃতি সংঘে। সোমনাথ মানে বাবনের খোঁজ করতেই তাকে ডেকে আনলো এক যুবক।
সাক্ষাত পাওয়া গেল ৩৭/৩৮ বছর বয়সী এর ঝকঝকে তকতকে চেহারার যুবকের, নাম বাবন। চা খেতে খেতে কথা প্রসঙ্গে তার কাছ থেকে শোনা গেল অনেক কথা। জানা গেল সমাজসেবার মধ্য দিয়েই তিনি আনন্দ পান। ২১ বছর বয়স থেকেই এটা তার অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। সমাজসেবাই তার ধ্যান-জ্ঞান। এইসঙ্গেই তার কাছ থেকে জানা গেল, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য । সিঙ্গুর আন্দোলন থেকেই সক্রিয় ভাবে পার্টির সঙ্গে যুক্ত তিনি। তারপর থেকে পার্টির যে কোনও কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে যুক্ত রয়েছেন বলে জানালেন তিনি।
সোমনাথবাবুর কথাবার্তা শুনে মনে হলো…. তৃণমুলের কর্মী হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালনে দলের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। স্বভাবতঃই মনে হচ্ছে এই ধরনের মানুষকে তার দল যদি কোনও গুরু দায়িত্ব দেয়, তবেই হবে এলাকার মানুষের উন্নতি ও প্রকৃত পরিষেবা।